আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ!
সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মুবারকবাদ । আশা করি সকলে ভালো আছেন। সর্বাবস্থায় মহান প্রভুর শুকরিয়া "আলহামদুলিল্লাহ "
সম্মানিত পাঠকগণ !
আজ আমরা জানবো সওম বা রোজা সম্পর্কে ।
প্রথমে জেনে নেই
সওম এর শাব্দিক অর্থ-
সওম এবং সিয়াম দুটাই আরবি শব্দ । এর আভিধানিক অর্থ হলঃ
১ । কাজ থেকে বিরত থাকা ।
২ । কঠোর সাধনা করা ।
৩ । অবিরাম চেষ্টা করা ।
৪ । আত্মসংযম ------ ইত্যাদি ।
এখন জনে নেই
সওম বা রোজার সংজ্ঞাঃ
আবুল হোসাইন কুদূরী ও জমহুর উলামায়ে কেরাম বলেন-
নির্দিষ্ট শর্তাবলির মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ে কতিপয় কাজ থেকে বিরত থাকার নাম সওম /
রোজা ।
শরহে বেকায়া গ্রন্থকার বলেন-
সওম বা রোজা হলো সুবেহ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রী-সম্ভোগ থেকে বিরত থাকা।
আশা করি এখন সকলে জানেন রোজা কী !
এখন জানব
রোজার হুকুমঃ
রমজানের রোজা ফরজ । যেমন আল্লাহ্ তায়ালা বলেন- “তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে , যেমন ফরজ করা হয়েছিলো তোমাদের পূর্ববর্তীগণের উপর ।“
কোরআনে কারিমের এই আয়াত দ্বারা সওম / রোজা ফরজ হয়েছে । আবার রমাজন মাসের রোজা ফরজ হওয়ার ব্যাপারে উম্মাতে মুহাম্মাদির “ইজমা” (ঐক্য) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । সুতরাং রমজানের রোজাকে অস্বীকার করলে অস্বীকারকারী কাফের হয়ে যাবে ।
আর মানতের রোজা ওয়াজিব অর্থাৎ ফরজের ন্যায় । যেমন পবিত্র কুরআনের বানী – “তারা যেন তাদের মানতসমূহ পূর্ণ করে ।“
জেনে রাখার জন্য আরেকটি বিষয় উল্লেখ করছি যে, হিজরি দ্বিতীয় সনে রমজানের রোজা ফরজ হয়েছে ।
রোজার বিধি-বিধানঃ
যেই রোজা নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সম্পর্ক রাখে , যেমনঃ রমজান মাসের রোজা এবং নির্দিষ্ট মানতের রোজা ।
এই প্রকার রোজার জন্য রাতে নিয়ত করতে হবে । আর যদি ভোর পর্যন্ত নিয়ত না করে থাকে, তাহলে সূর্য হেলে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়ে নিয়ত করলে যথেষ্ট হবে ।
আর যেই ওয়াজিব রোজা , যা দায়িত্বে আবশ্যকীয় হয়ে পড়ে । যেমন- রমজানের কাজা রোজা , ( শর্তহীন ) মানতের রোজা এবং কাফফারার রোজা । সুতরাং এই ধরণের রোজা রাতের নিয়ত ছাড়া জায়েজ হবে না ।
আর নফল রোজা সূর্য ঢলে যাবার পূর্ব পর্যন্ত নিয়ত করলেও জায়েজ হবে ।
চাঁদ দেখা
রমজানের রোজার ক্ষেত্রে মানুষের উচিৎ শাবানের ঊনত্রিশে চাঁদ তালাশ করা । অতঃপর যদি চাঁদ দেখে তাহলে রোজা রাখবে । আর যদি চাঁদ সকলের নিকট অদৃশ্য হয় বা দেখা না যায় তাহলে শাবানের ত্রিশ দিন পূর্ণ করে তারপর রোজা রাখবে ।
আর যদি কেউ একা রমজানের চাঁদ দেখে তাহলে সে একা রোজা রাখবে । যদিও তার সাক্ষ্য ইমাম বা সকলে গ্রহন না করে । আর যদি আকাশ পরিস্কার না থাকে বাধা-বিপত্তি থাকে ( মেঘ, ধোঁয়া, ধূলিবালি ইত্যাদি ) তাহলে ইমাম চাঁদ দেখার ব্যাপারে ন্যায়পরয়াণ বেক্তির সাক্ষ্য গ্রহন করবেন । চাই সে পুরুষ হোক বা স্ত্রী লোক , দাস হোক বা আজাদ হোক । আর যদি আকাশ পরিস্কার থাকে বাধা-বিপত্তি না থাকে, তাহলে সাক্ষ্য গৃহীত হবে না; যে পর্যন্ত অধিক লোক সাক্ষ্য না দেয় , যাদের খবরে চাঁদ দেখার বিশ্বাস দৃঢ় হয় ।